বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত গান "কারার ঐ লৌহকপাট" এর সুর বদলে ‘পিপ্পা' সিনেমায় যে গান ব্যবহৃত হয়েছে তা শ্রোতাদের অনেকের অভিযোগ, এ আর রহমানের হাতে পড়ে গানটি থেকে বিদ্রোহই হারিয়ে গেছে। সাংস্কৃতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক মহলের মানুষেরা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, সমালোচনায় সরব হয়েছেন সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা। কবি পরিবারের সদস্যরাও বিষয়টি ভালোভাবে নিতে পারেননি। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ গানের কথা এ আর রহমান ঠিক রাখলেও সুর পরিবর্তন করেছেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন এবং পরে বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে অনুপ্রেরণা জোগানো শতবর্ষীগান "কারার ঐ লৌহকপাট" নিয়ে এ বিতর্কের সূচনা সোশাল মিডিয়ায় পিপ্পার গানটি প্রকাশের পর থেকে। রাজাকৃষ্ণ মেনন পরিচালিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক হিন্দি সিনেমা ‘পিপ্পা’র জন্য নজরুলের ঐ গানটির নতুন কম্পোজিশন করেন অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। এ গান নজরুলের নিজের সুরারোপিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত।১৯২২ সালে ‘বাঙ্গলার কথা’ পত্রিকায় কবিতা হিসেবে প্রকাশিত হয় কাজী নজরুল ইসলামের লেখা "কারার ঐ লৌহকপাট"।
থা ও সুরঃ কাজী নজরুল ইসলাম
কারার ঐ লৌহকপাট
ভেঙ্গে ফেল কর রে লোপাট,
রক্ত-জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী।।
ওরে ও তরুণ ঈশান
বাজা তোর প্রলয় বিষাণ,
ধ্বংস নিশান উড়ুক প্রাচীর প্রাচীর ভেদি।।
কারার ঐ লৌহকপাট
ভেঙ্গে ফেল কর রে লোপাট,
রক্ত জমাট শিকল পূজার পাষাণ বেদী।
গাজনের বাজনা বাজা
কে মালিক, কে সে রাজা,
গাজনের বাজনা বাজা
কে মালিক, কে সে রাজা,
কে দেয় সাজা মুক্ত স্বাধীন সত্য কে রে?
হা হা হা পায় যে হাসি,
ভগবান পরবে ফাঁসি,
সর্বনাশী শিখায় এ হীন তথ্য কে রে।
কারার ঐ লৌহকপাট
ভেঙ্গে ফেল কর রে লোপাট,
রক্ত জমাট শিকল পুজার পাষাণ বেদী।
ওরে ও পাগলা ভোলা
দে রে দে প্রলয় দোলা,
ওরে ও পাগলা ভোলা
দে রে দে প্রলয় দোলা,
গারদগুলা জোরসে ধরে হ্যাচকা টানে,
গারদগুলা জোরসে ধরে হ্যাচকা টানে।
মার হাঁক হায়দারী হাঁক,
কাঁধে নে দুন্দুভি ঢাক,
ডাক ওরে ডাক মৃত্যুকে ডাক জীবন পানে।
কারার ঐ লৌহকপাট
ভেঙে ফেল কর রে লোপাট,
রক্ত জমাট শিকল পূজার পাষাণ বেদী।
নাচে ওই কাল-বোশেখী
কাটাবী কাল বসে কি?
নাচে ওই কাল-বোশেখী
কাটাবী কাল বসে কি?
দেরে দেখি ভীম কারার ঐ ভিত্তি নাড়ি,
দেরে দেখি ভীম কারার ঐ ভিত্তি নাড়ি,
লাথি মার ভাঙ্গরে তালা,
যত সব বন্দী শালায়
আগুন-জ্বালা, আগুন জ্বালা,
ফেল উপাড়ি।
কারার ঐ লৌহ কপাট
ভেঙ্গে ফেল কর রে লোপাট,
রক্ত জমাট শিকল পূজার পাষাণ বেদী।।
কোন মন্তব্য নেই: